Categories
Digital Marketing

ব্র্যান্ডগুলো ভোক্তাদের কাছে তার পণ্যের প্রচারণার জন্য বিনিয়োগ করে, সেই সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনার প্রচার প্রচারনার ফলাফল নিরীক্ষণ করতে সহায়তা করে।

করোনা মহামারীর পর থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। দেশীও পণ্য এবং ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং এর প্রভাব বেড়ে গিয়েছে। এফ কমার্স এ যারা খুচরো ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর নির্ভর হয়ে পরেছে। 

মহামারীর পর থেকে  থেকে, ব্র্যান্ড এবং সংস্থাগুলো ডিজিটাল মাধ্যমের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য, আকর্ষণীয় সামগ্রী তৈরি করা এবং ভোক্তাদের কাছে তার পণ্যটি আকর্ষণীয় করে তুলে ধরতে প্রচুর পরিমাণে কাজ করে যাচ্ছে।

 

কিন্তু কিছু  ভুলের কারনে ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতিতে আমরা পিছিয়ে পরছি। চলুন দেখে নেয়া যাক সেগুলো কি কি।

 

১। টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে সঠিক ধারণা না রাখা

আপনার টার্গেটেট কাস্টমার বাছাই করা এই ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টার্গেট কাস্টমারদের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করা এবং ডেমোগ্রাফিক্স, সাইকোগ্রাফিক্স বিশ্লেষণ করা। টার্গেট আডিয়েন্স বুঝে মার্কেটিং কৌশলগুলো তৈরি এবং সম্পাদন করতে পারলে কম সময়ে আপনার লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশিরভাগ মার্কেটার তাদের টার্গেট কাস্টমারদের বাছাই করতে পারে না বিধায় মার্কেটিং এর মাধ্যমে সেলস বৃদ্ধি করতে পারে না।

২। মার্কেট বিশ্লেষণ

সোশ্যাল  মিডিয়া এবং ক্যাম্পেইন মার্কেটিং প্রচারে পরীক্ষা নেয়া প্রযোজন। বাজারে নতুন পণ্য সরবরাহ করার আগে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলো নেয়া দরকার। নমুনা অনলাইন সার্ভে করা যেতে পারে। যেমনঃ

  • কীওয়ার্ডস 

শ্রোতারা বিভিন্ন উপায়ে নির্দিষ্ট কীওয়ার্ডগুলোতে রেসপন্স জানান । তাদের ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে তা বোঝার জন্য এটি প্রয়োজনীয়। পরীক্ষামূলক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারে এমন কিছু পেশাদার সহায়তার প্রয়োজন। কিওয়ার্ডস আপনার ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

  • কল টু একশন 

কাস্টমারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ  করার এটি একটি উত্তম পন্থা। তারা তাদের যাবতীয় প্রশ্ন এবং জিজ্ঞাসা গুলো করতে পারেন। কিন্তু বেশীরভাগ মার্কেটার এই কাজটি করে থাকেননা, যার ফলে দর্শকদের জন্য একঘেয়ে লাগতে পারে। অপরদিকে কল টু একশন আপনার কাস্টমার এনগেজমেন্ট বৃদ্ধি করবে। কোন একটি পণ্য দেখার পর অনেক কিছুই মাথায় আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি সেলার হয়ে যদি ক্লায়েন্টের সাথে কথা না বলেন তিনি তখন আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

সম্পদ বরাদ্দ

মার্কেটিং এর জন্য সঠিক ভাবে বাজেট নির্ণয় অত্যন্ত জরুরী। নির্দিষ্ট সময়ে বাজেট বরাদ্দ করতে না পারলে পরবর্তীতে মার্কেটিং এর উপর প্রভাব ফেলবে। ডিজিটাল সরঞ্জাম বা সফ্টওয়্যার ব্যয় করা উপকারী হতে পারে তবে এই জাতীয় ডিভাইসগুলো কতটা উপকারী এবং তারা পণ্য বিভাগের জন্য কাজ করবে কিনা তা সনাক্ত করা অত্যাবশ্যক। বেশিরভাগ মার্কেটার এই ভুলটি করেন যা তাদের মার্কেটিং এ বাধা সৃষ্টি করে থাকে।

৫।খুব বেশি অথবা খুব কম

বেশিরভাগ মার্কেটার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালেটিক্স টুলস অথবা অন্যান্য সরঞ্জামের মধ্যে ব্যালেন্স রাখাটাকে চ্যালেঞ্জিং মনে করে থাকে। তারা হয় একটি প্ল্যাটফর্মে ফোকাস করে থাকে অথবা এমন কোন প্ল্যাটফর্ম উপেক্ষা করে থাকে যা মার্কেটিং এর জন্য অধিক প্রয়োজনীয়। ধরুন আপনি b2b ব্যবসা করছেন, সে ক্ষেত্রে পরিচিতি বাড়ানোর জন্য লিংকডইন হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম । অথচ আপনি এদিকটা সম্পূর্ণই এড়িয়ে যাচ্ছি। 

৬। মানের চেয়ে পরিমাণ

প্রতিদিন কনটেন্ট সরবরাহ করা অপরিহার্য, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হল আকর্ষণীয় এবং মনোমুগ্ধকর কনটেন্ট সরবরাহ করা। এটি এমন একটি যুগ যেখানে উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতা মানুষের দিগন্তকে প্রশস্ত করে এবং তাদেরকে নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে আসে। বেশিরভাগ মার্কেটারদের উচিৎ এই বিষয়টি মাথায় রাখা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা।

৭। ভুল চ্যানেলগুলোতে মার্কেটিং

টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট, ফেসবুকের মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যদি আপনি ৩৫ বছরের উপরে বয়সের এমন একটি পণ্য মার্কেটিং করেন তবে ইনস্টাগ্রাম আপনাকে বেশি লিড দিবেনা না, কেননা ইন্সটাগ্রামে ১৬ থেকে ২২ বছর বয়সীরা বেশি ব্যবহার করে থাকে। বেশিরভাগ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে সুবিধাজনক হিসেবে। সেক্ষেত্রে মার্কেটিং কৌশলটি সেই চ্যানেলে ফোকাস করা দরকার। বেশিরভাগ সময় মার্কেটার ভুল মিডিয়াতে প্রচার করে থাকেন।

৮। ইনফুয়েন্স মার্কেটিং

আপনি আপনার মার্কেটিং প্রচেষ্টাগুলোতে যদি ইনফ্লুয়েন্স মার্কেটিং ব্যবহার না করে থাকেন, তাহলে আপনি একটি বড় ভুল করছেন। কারণ আপনি যাদের দিয়ে এই মার্কেটিং করাবেন তারা আপনার ফলোয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

৯। ছবি এবং ভিডিও

মার্কেটিং এর জন্য এটি একটি বেশ উপকারী কৌশল। ওয়েবসাইটে ভিজ্যুয়াল নন্দনতত্ব তৈরি করতে এবং গ্রাহকদের মনে একটি অনুকূল ধারণা তৈরি করতে সহায়তা করে। বেশির ভাগ মার্কেটার তাদের কোম্পানির জন্য ছবি এবং ভিডিও তৈরি করতে ভুল সার্ভিস নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে এক্সপার্ট কারো সাহায্য নেয়া অত্যাবশ্যক।

১০। বিনিয়োগের রিটার্ন

রিটার্ন না বুঝে কখনোই ডিজিটাল মার্কেটিং এ বিনিয়োগ করবেন না। কাজ করার সময় এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত; অন্যথায়,  মার্কেটিং কৌশলটি উপযুক্ত কিনা এবং বা  ক্ষতির কারণ কিনা তা না জানার ফলে ব্যবসায় লস হতে পারে।

১১। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অপিরিসীম। অনেকেই এটিকে উপেক্ষা করে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ব্যাপারে অজ্ঞাত থাকা একটি বিরাট ভুলের স্বরূপ। ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।

 

আমরা আশা করি এই পয়েন্টগুলো  আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এ সহায়ক হবে। কিছু কিছু ভুল মার্কেটার করে থাকে কিন্তু আমি বলবো সেগুলি যাতে পরবর্তীতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সেট করার পরেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কৌশল গুলো প্রয়োগ করুন।

 

– এন আলম মুন্না

ডিজিটাল মার্কেটিং স্পেশালিষ্ট

Grow with Munnna