Categories
Youtube

আজকাল ফেসবুকের পাশাপাশি মানুষ যে জিনিসটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সেটা হল ইউটিউব। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অথচ ইউটিউব ব্যবহার করেন না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন। শিক্ষা, বিনোদন, খেলা, সংবাদ, প্রযুক্তি, সাজসজ্জা, রান্না ও ভ্রমণ থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের ভিডিও রয়েছে ইউটিউবে। ইউটিউব যেমনি শিক্ষা-বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যমে পরিণত হয়েছে, তেমনি ইউটিউবে নিজের যেকোনো পণ্য (product) বা সার্ভিস (service) ভিডিওর মাধ্যমে লোকেদের মাঝে সহজে প্রচার বা মার্কেটিং (marketing) করে নিতে পারে। বিশেষ ভাবে, ইউটিউবের থেকে অনলাইন টাকা আয় করাটা অনেক সহজ । তাই, আমি আজ শেয়ার করব কিভাবে আপনি একজন সফল ইউটিউবার হতে পারবেন তার কিছু উপায়।
১.সঠিক কনটেন্ট নির্বাচন করুনঃ
ইউটিউবে চ্যানেল গড়ার শুরুতেই বেছে নিতে হবে কী ধরনের ভিডিও থাকবে সেখানে। শিক্ষামূলক, নিছক বিনোদন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বা যেকোনো কিছুর পর্যালোচনার (রিভিউ) ভিডিও? একটি চ্যানেলে একাধিক ঘরানার ভিডিও দেওয়া হলে সেটির বৈশিষ্ট্য তৈরি হবে না, ফলে কষ্ট হবে সাবস্ক্রাইবার পেতে। তার মানে এই নয় যে একই ইউটিউবার বিভিন্ন ঘরানা নিয়ে কাজ করে না, আলাদা আলাদা চ্যানেলে তারা ঘরানা হিসেবে ভিডিও আপলোড করে থাকে। অনেকটা টিভিতে আলাদা সিনেমার চ্যানেল, খবরের চ্যানেল আর খেলার চ্যানেলের মতো। কাজের ক্ষেত্র বেছে নেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সে বিষয় থাকা অন্যান্য চ্যানেল থেকে নিজের চ্যানেলের কনটেন্ট যেন কিছুটা হলেও আলাদা হয়।
২. informative তথ্য প্রদানঃ
সবসময় এমন ভিডিও বানানোর চেষ্টা করবেন যেই ভিডিও দেখে লোকেরা রুচি পান। আপনার ভিডিও যেই বিষয়ে বানানোর কথা ভাবছেন, সেই বিষয়ে পুরো জ্ঞান নিয়ে প্রত্যেকটি জিনিসের ডিটেইল দিয়ে ভিডিও বানাবেন।
এতে, যে আপনার ভিডিও দেখবে সে ভিডিওর বিষয়ে আপনার ভিডিও দেখে জেনেযাবে। ফলে আপনার ভিডিও অধীন (interesting) হবে এবং সব ধরণের তথ্য (information) লোকেরা পাবে।
মনে রাখবেন, যতটা বেশি details, information দিয়ে তভিডিও বানাবেন, ততটাই বেশি লোকেরা আপনার ভিডিও দেখে ভালো পাবেন।

৩. ভাইরাল টপিকের উপর ভিডিও তৈরি ক্রুনঃ
বিভিন্ন সময় বেশ কিছু ভাইরাল টপিক থাকে। সে-সব ভাইরাল টপিকের উপর ইউটিউবে প্রচুর সার্চ হয়। সুতরাং সেই সময় যদি আপনি ইউটিউব ভাইরাল টপিকের উপর ভিডিও তৈরি করেন, তাহলে সহজেই মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এসব ভাইরাল টপিক যেন আপনার চ্যানেলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
৪. সরাসরি সম্প্রচার করুনঃ
বিশেষ কিছু কনটেন্ট, যেমন গেইমিং, সাক্ষাৎকার বা ইভেন্টের ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করাও ইউটিউবের অন্যতম ব্যবহার। গেইম লাইভ স্ট্রিম করার জন্য তেমন হার্ডওয়্যার প্রয়োজন না হলেও অন্তত মানসম্মত ওয়েবক্যাম এবং মাইক্রোফোন খুবই জরুরি। দর্শক শুধু গেইমই নয়, গেইমারকেও দেখতে এবং শুনতে চায়।
৫. ভিডিও এডিটর নির্বাচনঃ
ভালো মানের ভিডিও এডিটিং আপনার ভিডিও জনপ্রিয় করতে সহায়তা করবে। ভিডিও এডিটিংয়ের সময় সঠিক ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যোগ, অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে ফেলা, গুরুত্বপূর্ণ অংশ যোগ করা ইত্যাদি কাজ করার মাধ্যমে ভিডিওকে প্রাণবন্ত করে তোলা যায়। কম্পিউটারের জন্য সেরা ৪টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের তালিকা থেকে আপনার পছন্দ মত একটি নির্বাচন করে নিন।তবে সম্পাদিত ভিডিও এক্সপোর্ট করার সময় জিপিউও ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই অন্তত কোয়াডকোর সিপিও, ৮ গিগাবাইট র‌্যাম এবং এসএসডিসমৃদ্ধ পিসি ব্যবহার করা উচিত। সফটওয়্যারের দিক থেকে সনি ভেগাস, ক্যামতাসিয়া, এডোবি প্রিমিয়ার প্রো ভিডিও সম্পাদনার জন্য সমাদৃত। এ ছাড়া আছে দ্য ভিঞ্চি রিসলভ এবং ম্যাক ওএসের জন্য ফাইনাল কাট প্রো। আইওএসের ক্ষেত্রে আইমুভির চেয়ে শক্তিশালী ভিডিও এডিটর কমই আছে। অ্যানড্রয়েডে আছে সাইবারলিংক পাওয়ার ডিরেক্টের ভিডিও এডিটর, ফিলমোরা এবং ম্যাজিস্টো।
৬. স্যোশাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকুন ঃ
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকাটা জরুরী। কেননা এইসব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিউয়ার এবং সাবস্ক্রাইবার আনা সম্ভব। এছাড়া এসব সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার চ্যানেলের বা আপনার নিজের ব্রান্ড আইডেন্টি তৈরি হবে। ফলে আপনি দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন। তাই চেষ্টা করবেন আপনার চ্যানেলের নামে পেইজ এবং গ্রুপ তৈরি করে একটা সক্রিয় কমিউনিটি তৈরি করার।
৭ .পূর্বপ্রস্তুতি নিনঃ
চিত্রনাট্য ছাড়া কোনো ভিডিও সুন্দরভাবে তৈরি করা অসম্ভব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে। কী বিষয়ে ভিডিওটি তৈরি হবে, সেটি ঠিক করার পর কত লম্বা হবে, তা-ও নির্ধারণ করতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে ভিডিওটি থাকলে ভালো হয়। তবে শিক্ষামূলক বা লম্বা পর্যালোচনার জন্য সেটির দৈর্ঘ্য ২০ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে।

৮ইউটিউব স্টুডিওঃ
প্রতিটি চ্যানেলের জন্য ইউটিউব একটি আপলোড ও সম্পাদনার জন্য পেইজ দিয়ে থাকে। এখানে ভিডিও আপলোডের পর কিছু ছোটখাটো সম্পাদনা, ভিডিওর প্রিভিউ এবং থাম্বনেইল নির্ধারণ, চ্যানেলের বিবরণ, ভিডিওর বিবরণ নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। প্রয়োজনে ভিডিও আপলোডের পর সেটি প্রকাশনার সময়ও নির্ধারণ করে শিডিউল তৈরি করা যায়। চ্যানেল গড়তে হলে অবশ্যই ভিডিওর টাইটেল, থাম্বনেইল এবং ট্যাগ হতে হবে আকর্ষণীয়। এর বাইরে সপ্তাহে অন্তত একটি করে হলেও ভিডিও দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট সময়ে ভিডিও প্রকাশের। এতে করে আপনার চ্যানেলের প্রতি দর্শকদের একটা আস্থা তৈরি হবে। নির্দিষ্ট সময়ে আপনার চ্যানেলের নতুন ভিডিওর জন্য অপেক্ষা করে থাকবে ভক্ত-দর্শক।

৯ .সতর্কতা অবলম্বনঃ
আপনাকে অবশ্যই কপিরাইট ও কমিউনিটি গাইডলাইন মানতে হবে। এ নির্দেশনাগুলো না মানলে আপনার মনিটাইজেশন (আয়) বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমনকি আপনার চ্যানেলটি বন্ধও হতে পারে। কপিরাইট ও কমিউনিটি গাইডলাইনের তিনটি স্ট্রাইক থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একেকটি স্ট্রাইকের জন্য ভিডিও মুছে যাওয়া, লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ হওয়া, ভিডিও আপলোড করতে না পারার মতো ঘটনা ঘটে। আর তৃতীয় স্ট্রাইকে চ্যানেল বন্ধ করা হয়। তবে আপনি যদি মনে করেন, আপনার কপিরাইট স্ট্রাইকটি ভুল করে দেওয়া হয়েছে—তাহলে কাউন্টার নোটিফিকেশন দিতে পারেন।

===============
আপনার পছন্দের কোর্স রেজিষ্ট্রেশন করে রাখতে পারেন –http://shorturl.at/dlnN7

===============

আরেও বিস্তারিত জানতে কল করুন – 01844672471, 01844672472

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *